Teacher’s Day – 5 ই সেপ্টেম্বর পালন করার নেপথ্যে এর কারণ…

ভারতে শিক্ষক দিবস হিসাবে 5 ই সেপ্টেম্বর পালিত হওয়ার ইতিহাস ও গুরুত্ব…
প্রতি বছর ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মবার্ষিকীকে তার অবদান এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসাবে উদযাপন করা হয়। ডক্টর রাধাকৃষ্ণান জন্মগ্রহণ করেন 5 সেপ্টেম্বর,1888-তে তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে। তিনি শুধু মাত্র স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (1952-1962) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি(1962-67) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেননি, তিনি একজন পণ্ডিত, দার্শনিক এবং ভারতরত্ন পুরস্কারপ্রাপ্তও ছিলেন।

এক দরিদ্র ধর্মীয় ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান রাধাকৃষ্ণন ছাত্র বৃত্তির উপরেই সমগ্র শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।জীবনে কোনো পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ওনার বিষয়টি ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’(The Ethics of the Vedanta and its Metaphysical Presuppositions) এবং 1918 সালে “The Philosophy of Rabindranath Tagore” বইটি লিখেছিলেন। ওনার দ্বিতীয় বই “The Reign of Religion in Contemporary Philosophy” 1920 সালে প্রকাশিত হয়েছিল। 1921 সালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক ও নৈতিক বিজ্ঞানের রাজা পঞ্চম জর্জ চেয়ারে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য দর্শনের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি 1931 থেকে 1936 সাল পর্যন্ত অন্ধ্রপ্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, 1936 সালে রাধাকৃষ্ণানকে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্টার্ন রিলিজিয়ন অ্যান্ড এথিক্সের স্প্যাল্ডিং প্রফেসর মনোনীত করা হয় এবং অল সোলস কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন একই বছর। আবার 1937 সালে, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। এবং 1939 সালে মদন মোহন মালব্য তাকে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএইচইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে আমন্ত্রণ জানান। তিনি 1948 সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এর ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

1931 সালে তিনি ভারতরত্ন, 1954 সালে ভারতের সর্বোচ্চ নাগরিক পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি 1963 সালে ব্রিটিশ রয়্যাল অর্ডার অফ মেরিটের সম্মানসূচক সদস্য হিসাবে ভর্তি হন। তিনি 17 এপ্রিল 1975 সালে মারা যান, তখন পর্যুন্ত উনি 11 বার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।

কেন ভারতে 5 সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসাবে পালিত হয় ?
1962 সালে ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পায়ার পর ওনার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা ওনার জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ সেপ্টেম্বরকে “শিক্ষক দিবস” হিসাবে পালন করার অনুরোধ করেছিলেন, সমাজে শিক্ষকদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে।

শিল্পকর্মে অবদান সত্ত্বেও উনি সারাজীবন শিক্ষক হয়েই ছিলেন। ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং আমাদের জীবনে সংবিধানের গুরুত্ব পুনর্নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক দিবস পালিত হয়।

পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু একবার রাধাকৃষ্ণন সম্পর্কে বলেছিলেন, “আমাদের দেশের সেবায় নিয়োজিত আছেন।” তবে সর্বোপরি, তিনি একজন মহান শিক্ষক, আমরা সবাই অনেক কিছু শিখেছি এবং শিখতে থাকবো। আমাদের রাষ্ট্রপতি, একজন মহান তাত্ত্বিক, একজন মহান শিক্ষাবিদ এবং একজন মহান মানবতাবাদী রূপে একজন বিশেষ গুরু।

আমাদের জীবনে শিক্ষকদের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং সমাজে তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালিত হয়।


শিক্ষক দিবস উদযাপনের জন্য, বেশিরভাগ স্কুল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যেখানে শিক্ষার্থীরা গান, নাচ, নাটক, কবিতা এবং আরও অনেক কিছু আকারে শিক্ষকদের কাজের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানায়। অনেক সিনিয়র ছাত্ররাও শিক্ষক হিসাবে পোশাক পরে এবং পুরো দিন ক্লাস পরিচালনা করে।

Leave a comment

%d bloggers like this: